বৈশ্বিক তাপমাত্রা - ২০১৬ পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ বছর
হওয়ার পথে রয়েছে....
২০১৬ সালের জুন মাস বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হিসেবে ধারাবাহিকভাবে ১৪তম। আর বিংশ শতাব্দীর গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি একটানা তাপমাত্রা রয়েছে, এমন হিসেবে এই মাস ৩৭৮তম।
এর ফলে বৈশ্বিক
উষ্ণতার কারণে কার্বন ডাইঅক্সাইড ঘনত্ব বাড়ার পরিমাণ চলতি বছর বেড়ে বায়ুমণ্ডলে
প্রতি দশ লাখে ৪০০ অংশের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা যায়.......
ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলোজিক্যাল অর্গানাইজেশন সংস্থার
মহাসচিব পেটারি টালাস এক বিবৃতিতে বলেন, "আরেকটি মাস,
আরেকটি রেকর্ড
এবং আরেকটি জলবায়ু পরিবর্তনের কয়েক দশকের ধারা নতুন নতুন সীমায় পৌছাচ্ছে, আর এতে
শক্তি যোগাচ্ছে শক্তিশালী ২০১৫/২০১৬ এল নিনো।"
ওই প্রতিবেদনে
দেখা যায়, এই উষ্ণতার ফলে খুব জলদি বড় বরফের চাদরগুলো গলতে শুরু করেছে। উষ্ণতার
অবস্থা আবহাওয়া অবস্থার সঙ্গে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক
অঞ্চলে সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি শুষ্ক অবস্থা অনুভূত হচ্ছে। আর অন্যদিকে, চীন,
মধ্য ইউরোপ আর অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল সাধারণ আবওয়ার চেয়ে বেশি আর্দ্র অনুভূত
হচ্ছে, জানিয়েছে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর।
এই উষ্ণতা
বৃদ্ধির ফলে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ছে বলে জানানো হয়েছে
প্রতিবেদনটিতে।
নাসার
সূত্রমতে, ২০১৬ সালের প্রথমার্ধে গড় তাপতাতা ঊনবিংশ শতাব্দীর একই সময়ের তুলনায় ১.৩
ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ, এর কারণ হচ্ছের শিল্পায়ন।
চলতি বছরের প্রথম ছয়
মাসে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ভেঙেছে অতীতের রেকর্ড। কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের
পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই এর প্রধান কারণ বলে জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড
মেটিওরোলোজিক্যাল অর্গানাইজেশন। এ অবস্থায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমাতে সই হওয়া
প্যারিস জলবায়ু চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ
বিজ্ঞানীরা।
বিগত ১৩৭ বছর ধরে সংরক্ষণ করা বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রার
রেকর্ড বলছে, বিংশ শতাব্দীতে জুন মাসের গড় তাপমাত্রার চেয়ে এ বছরের জুনের
তাপমাত্রা ছিল দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা
নাসার তথ্যমতে, এ নিয়ে ১৪ বছরে টানা ১৪ বারের মত উষ্ণতার নতুন রেকর্ড
সৃষ্টি হলো।
২০১৬ সালের প্রথমার্ধের গড় তাপমাত্রা ঊনবিংশ শতাব্দীর একই
সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ। বিজ্ঞানীদের ধারণা,
উষ্ণতার দিক থেকে এ বছরই হতে পারে পৃথিবীর ইতিহাসের রেকর্ড উষ্ণ বছর।
বছর বছর তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে কার্বন ডাই-অক্সাইড
গ্যাসের নির্গমনকে দায়ী করেছে ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলোজিক্যাল
অর্গানাইজেশন-ডব্লিউএমও।
ডব্লিউএমও’র জলবায়ু গবেষক ডেভিড কার্লসন বলেন,
২০১৬ সালের প্রথম ৬ মাসের তাপমাত্রা বাড়ার রেকর্ড খুবই উদ্বেগজনক। কেবল
একটি মাসই খুব গরম বা উষ্ণ ছিল তাই নয়, বিগত সবগুলো মাসের তাপমাত্রাই অন্য
বছরের তুলনায় বেশি ছিল।
ক্রমাগত উষ্ণতার ফলে খুব জলদি বড় বরফের
চাদরগুলো গলতে শুরু করেছে। ফলাফল স্বরূপ, হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক
বাস্তুতন্ত্র। বিনষ্ট হচ্ছে আবহাওয়াজনিত ভারসাম্য। এমনটা চলতে থাকলে
আবহাওয়াজনিত মারাত্মক বিপর্যয় ঘটার আশংকায় পরিবেশবিজ্ঞানরা।
পরিবেশবিজ্ঞানরা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বেড়ে যাওয়ার যে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে
তাতে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বসে থাকার মতো সময়
নেই। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী কার্বন
নিঃসরণ
কমানোর সিদ্ধান্তগুলো দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া খুবই জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনের কয়েক দশকের ধারা নতুন নতুন সীমায় পোঁছাচ্ছে। মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক অঞ্চলে সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি শুষ্ক অবস্থা বিরাজ
করছে। আর অন্যদিকে, চীন, মধ্য ইউরোপ আর অস্ট্রেলিয়ার অধিকাংশ অঞ্চলে অনুভূত
হচ্ছে সাধারণ আবহাওয়ার চেয়ে বেশি আর্দ্রতা।
No comments:
Post a Comment